কন্টিনিউরিটি টেস্ট (Continuity Test)

এসএসসি(ভোকেশনাল) - জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস-২ - ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট টেস্ট, | | NCTB BOOK

যে কোন ওয়্যারিং কাজ শেষ করার পর সরবরাহ প্রদানের পূর্বে উক্ত ওয়্যারিং এর কন্টিনিউয়িটি বা নিরবচ্ছিন্নতা সঠিক আছে কিনা তা যে টেস্টের মাধ্যমে জানা যায়, তাকে ওয়্যারিং এর কন্টিনিউরিটি টেস্ট বলে। ওয়্যারিং এর নিরবচ্ছিন্নতা ঠিক না থাকলে ওয়্যারিং এর পয়েন্টসমূহে সংযুক্ত লোডগুলি কাজ করবে না। তাই ওয়্যারিং কাজ শেষ করার পর এর কন্টিনিউরিটি বা নিরবচিত্রতা পরীক্ষা করা আবশ্যক। কন্টিনিউরিটি পরীক্ষার মাধ্যমে ওয়্যারিং এ ব্যবহৃত পরিবাহী কোথাও কোন ছেঁড়া, কাটা, ভাজা কিংবা কোন জাংশন বক্সে সংযোগ নেই এমন অবস্থাসমূহ জানা যায় ।

আর্থ কন্টিনিউরিটি পরীক্ষা করার পদ্ধতি: ওয়্যারিং এর আওতায় যে সকল ধাতব বডির সরঞ্জাম থাকে সেগুলোর ধাতব অংশকে আর্থের সাথে সংযোগ করে দিতে হয়। দুর্ঘটনার হাত হতে বৈদ্যুতিক ব্যাপাতি এবং মানুষকে রক্ষা করার জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ধাতু নির্মিত বাহিরের অংশের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হবে। যাতে কারেন্ট পরিবাহী তারের ভিতর দিয়ে নিরাপদভাবে মাটিতে চলে যেতে পারে ঐ ব্যবস্থাকে আর্থিং বলে। আর্থ তারের নিরবচ্ছিন্নতা বা কন্টিনিউরিটি ঠিক না থাকলে ব্যবহারকারী যে কোন সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। তাই আর্থ তারের নিরবচ্ছিন্নতা বা কন্টিনিউয়িটি ঠিক আছে কিনা তা জানতে অর্থ কন্টিনিউরিটি পরীক্ষা করা হয়।

চিত্র-৪.৩ আর্থ কন্টিনিউরিটি পরীক্ষা

এ পরীক্ষায় প্রথমে মেইনসুইচ অফ করে ফিউজ খুলে নিতে হবে। সার্কিটের অন্যান্য ফিউজগুলো যথারীতি লাগানো থাকবে। বাতি, পাখাসহ সকল লোড / ডিভাইস লাগিয়ে রাখতে হবে। সকল সুইচ অফ রেখে মেইন সুইচ থেকে বেরিয়ে যাওয়া দু'টি কন্ডাকটরের সাথে মেগারের L ও B টার্মিনাল সংযোগ দিতে হবে এবং এক একটি করে সুইচ অন করে মেগারের কাঁটা ঘুরালে যদি ফেগারের কাঁটা শূন্য ডিফ্লেকশন দেয়, তবে বুঝতে হবে কন্টিনিউরিটি ঠিক আছে। যদি ফাটা শূন্য (০) থেকে দূরে থকে, তাহলে বুঝতে হবে কন্টিনিউরিটি ঠিক নেই। এভাবে একটি একটি করে সুইচ অন করে কভিনিউটি টেস্ট করতে হবে।

সেপারের পরিবর্তে মাল্টিমিটার বা কন্টিনিউরিটি টেস্টার/আর্থ টেস্টার দ্বারা এ টেস্ট করা যায় ।

ওয়্যারিং টেস্টের জন্য বহুল ব্যবহৃত টেস্ট ল্যাম্প ব্যবহার করা যেতে পারে। যে কোনো ইলেকট্রিশিয়ানের জন্য টেস্ট বাতি একটি অতি প্রয়োজনীয় ও সহজলভ্য সরঞ্জাম। কোন হোল্ডারে দুইগাছা ইনসুলেট করা তার চিত্র অনুযায়ী সংযোগ করে নিলেই টেস্ট বাতি প্রস্তুত হয়ে যায়। যা চিত্রে দেখানো হয়েছে। টেস্ট ৰাতি দুই ধরনের হয়ে থাকে।

(ক) সিলেন ফেজ টেস্ট বাভি ও (খ) থ্রি-ফেজ টেস্ট ৰাতি ।

এ অধ্যায়ে শুধু সিঙ্গেল ফেজ টেস্ট বাতির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কারণ থ্রি ফেজ ও সিঙ্গেল ফেজ এর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো থ্রি ফেজের লাইন ভোল্টেজ (ফেজ টু ফেজ) ৪০০ ভোল্ট। আর প্রতিটি বাতির ভোল্টেজ ২৫০ ভোল্ট। সেজন্য দু'টি বাতি সিরিজে সংযুক্ত করে থ্রি ফেজের টেস্ট বাতি তৈরি করা হয়, যা চিত্রে দেখানো হয়েছে। টেস্ট বাতি যে সমস্ত কাজে ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো-

১। কোন লোডে বিদ্যুৎ সরবরাহ আছে কিনা তা জানা যায় ।

২। সাপ্লাই ভোল্টেজ পরিমিত আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা যায়।

৩। কোন যন্ত্রপতিতে বডি বা আর্থ ফন্ট হলে তা পরীক্ষা করে জানা যায়।

৪। আলাদা আর্থিং এর ব্যবস্থা থাকলে টেস্ট বাতি দিয়ে সাপ্লাইয়ের ফেজ ও নিউট্রাল লাইন শনাক্ত করা যায়।

৫। সাপ্লাইয়ের তারের নিরবচ্ছিন্নতা, কয়েলের কার্যকরী অবস্থা, সুইচের পোলারিটি টেস্ট করা যায়। 

৬। যে কোন মেশিনের কয়েলের শর্ট সার্কিট, আর্থ ফন্ট এবং ওপেন সার্কিট ত্রুটি পরীক্ষা করা যায়। উল্লেখিত বর্ণনা থেকে আমরা সহজেই বলতে পারি টেস্ট বাতির গুরুত্ব খুব বেশি।

কোন সার্কিটে কারেন্ট চলার পথ ঠিক আছে কিনা দেখতে হলে টেন্ট-বাতির সাহায্যে নেয়া হয়। সেজন্য দুই টার্মিনালের মধ্যে ভোল্টেজ আছে কিনা তা দেখতে হলে ঐ দুই টার্মিনালের সঙ্গে টেস্ট-বাতি ধরলেই বোঝা যায়। যদি বাতি জ্বলে তবে ভোল্টেজ আছে এবং বাতির উজ্জ্বলতার উপর নির্ভর করে সাপ্লাই ভোল্টেজ কিরূপ মানের আছে। এসব ক্ষেত্রে ভোল্টেজের উপর নির্ভর করে সিঙ্গেল ফেজ বা থ্রি ফেজ টেস্ট বাতি ব্যবহার করতে হবে। দু'টি টার্মিনালের মধ্যে কোনটি ফেজ তার আর কোনটি নিউট্রাল তার তা টেস্ট বাতির সাহায্যে জানা যায়; সে ক্ষেত্রে আর্থ টার্মিনাল থাকতে হবে। আর্থ করা নিউট্রাল হলে যদি লাইভ টার্মিনাল কিংবা ফেজ তারের সঙ্গে টেস্ট বাতির একটি তার লাগিয়ে অন্য তারটি আর্থের সঙ্গে কানেকশন করা যায়, তবে বাতি জ্বলবে। তাই এভাবে কানেকশন করলে যখন টেস্ট বাতি জ্বলে, তখন বুঝতে হবে লাইনের লাইভ টার্মিনাল বা ফেজ তার। আর যদি না জ্বলে, তবে সেটি নিউট্রাল তার। বৈদ্যুতিক মেশিনের কয়েল টেস্টের জন্য কয়েলের সাথে সিরিজে বাতি সংযোগ করলে যদি দেখা যায় কোন কয়েলে বাতি কম আলোতে জ্বলছে, তবে সে কয়েল ঠিক আছে। কিন্তু যে কয়েলের ক্ষেত্রে টেস্ট বাতি বেশি

উজ্জ্বল হয়ে জ্বলবে, বুঝতে হবে সেই কয়েলেই 'শর্ট' আছে। যদি কোন মেশিনে আর্থ বা গ্রাউন্ড ফল্ট হয়, অর্থাৎ বডিতে বৈদ্যুতিক কানেকশন হয়ে যায়, তবে তাকে মেশিনের আর্থ হওয়া বলে।

এরূপ ত্রুটি নির্ণয় করতে টেস্ট বাতির একটি তার মেশিনের গায়ে লোহার সঙ্গে এবং অন্যটি আর্থে সংযোগ করলে যদি টেস্ট বাতি জ্বলে, তবে বুঝতে হবে মেশিনে গ্রাউন্ড আছে। টেস্ট ল্যাম্পের সঠিক ব্যবহারে খুব সহজে এবং কোন লিখিত পাঠ নেওয়া ছাড়াই টেস্ট করা যায়।

Content added By
Promotion